
রেশম তলোয়ার
আজ খবর (বাংলা), [বিনোদন], নতুন দিল্লী, ভারত, ০৮/০৪/২০২৫ : রেশম তলোয়ার সর্বদাই কন্ঠস্বরের শক্তিতে বিশ্বাস করতেন। একজন দৃষ্টিহীন শিল্পী হিসেবে তিনি জানতেন যে, তাঁর কন্ঠস্বর শব্দের চেয়েও বেশি কিছু বহন করে। এতে আবেগ, অভিব্যক্তি এবং চরিত্রগুলিকে জীবন্ত করে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে কন্ঠস্বরের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক জগতে নিজের স্থান তৈরি করে নিয়েছেন।
দিল্লিতে আয়োজিত ওয়েভস্ অ্যানিমি অ্যান্ড ম্যানগা কন্টেস্ট (ডব্লিউএএম) – এ ভয়েস অ্যাক্টিং বিভাগে জয়লাভ করেছেন তিনি। প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শিল্পী সত্ত্বা যে কোনও বাধা অতিক্রম করতে পারে। রেডিও জকি, ভয়েস ওভার এবং অডিও এডিটিং – এ রেশম তাঁর দক্ষতা ইতিমধ্যে প্রমাণ করেছেন। ডব্লিউএএম-তে জয়লাভ তাঁকে আরও বড় মঞ্চ করে দিয়েছে। তাঁর প্রতিভা শিল্প নেতৃত্বদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায়, ডব্লিউএএম শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, সৃজনশীল প্রতিভা তুলে ধরার মাধ্যম।

মিডিয়া অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (এমইএআই)এর সহযোগিতায় কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ম্যানগা অ্যান্ড অ্যানিমি ক্ষেত্রে উৎসাহ যুগিয়েছে। এর লক্ষ্যই হ’ল – ভারতের উদীয়মান প্রতিভাকে তুলে ধরা, যাতে এক্ষেত্রে স্রষ্ঠারা তাঁদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পান। ১১টি শহরে রাজ্যস্তরের এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে, যার সমাপ্তি ঘটবে মুম্বাইয়ের জিও ওয়ার্ল্ড সেন্টারে পয়লা থেকে ৪ মে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড অডিও ভিজ্যুয়াল এন্টারটেইনমেন্ট সামিট (ওয়েভস্) ২০২৫ – এর মধ্য দিয়ে।
ম্যানগা হ’ল – এক ধরনের কমিক বই বা গ্রাফিক উপন্যাস, যা জাপানে শুরু হয়েছিল। ম্যানগা’কে যা বিশেষ করে তোলে তা হল এর চরিত্রগুলি। আর অন্যদিকে, অ্যানিমি হ’ল – ম্যানগা’কে জীবন্ত করে তোলার মতো কার্টুন সংস্করণ, যা পর্দায় দেখা যায়। ভারতে গত ১০ বছরে ম্যানগা ও অ্যানিমি ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশে প্রায় ১৮০ মিলিয়ন অ্যানিমি ভক্ত রয়েছেন। ভারত হল চীনের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অ্যানিমি বাজার। নারুতো, ড্রাগন বল, ওয়ান পিস, অ্যাটাক অন টাইটান এবং মাই হিরো অ্যাকাডেমিয়ার মতো অনুষ্ঠানগুলি ব্যাপক জনপ্রিয়। ভারত জুড়ে এর বিপুল অনুরাগী রয়েছেন। ২০২৩ সালে ভারতে অ্যানিমির বাজার মূল্য ছিল ১,৬৪২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩২ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৫০৩৬.০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও, ডিজনি প্লাস হটস্টার – এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলি ভারতীয় দর্শকদের জন্য অ্যানিমি দেখা সহজ করে তুলেছে।পাশাপাশি ম্যানগা খুব সহজেই পাওয়া যায় অ্যামাজন ও ফ্লিপকাটের মতো ই-বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে।
বারাণসীর এক ছাত্রী অ্যাঞ্জেল যাদব ডব্লিউএএম বারাণসীতে ম্যানগা বিভাগে যেভাবে তাঁর সৃজনশীল প্রতিভা তুলে ধরেছেন, তা বিচারকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাঁর শিল্পকর্ম কলকাতার বৈভবী স্টুডিও-কে এতটাই মুগ্ধ করেছিল যে, তারা তাঁকে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিল। এর পাশাপাশি, ভুবনেশ্বর ডব্লিউএএম – এ পেশাদার ম্যানগা শিল্পী রণদীপ সিং – এর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। এর থেকে বোঝা যায় যে, ডব্লিউএএম কিভাবে জীবন বদলে দিচ্ছে এবং এখানে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে নিজেদের প্রতিভা বিকাশে সুযোগ পাচ্ছেন।