আমাকে জেলে পাঠালেও এঁদের পাশে থাকব : মমতা 

আজ খবর (বাংলা), [রাজ্য], কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ০৭/০৪/২০২৫ :  কলকাতার নেতাজি  স্টেডিয়ামে  চাকরিহারাদের একাংশের সাথে মিলিত হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  এই সভায় সুপ্রীম কোর্টের প্রতি নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন চাকরিহারারা। আবার মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের ক্ষোভকে সমর্থন জানালেন। তিনি কার্যত চাকরিহারাদের পাশেই দাঁড়ালেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ।

২০১৬  এসএসসি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে কে যোগ্য এবং কে অযোগ্য তা বাছতে না পেরে গোটা  প্যানেলটাকেই  অবৈধ  ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেক্ষেত্রে সেদিনই চাকরি চলে গিয়েছিল প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা সুপ্রীম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ হাইকোর্টের রায়ই  বহাল রেখে দিয়েছিল  সুপ্রীম কোর্ট। সেক্ষেত্রে সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে চাকরি চলে গিয়েছে মোট  ২৫,৭৫০ জনের।  সুপ্রীম কোর্টের রায় শুনে মানসিকভবাবে ভেঙে পড়েছেন এই শিক্ষকরা। 

আজ কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সাথে সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সভায় নিজেদের ক্ষোভ পুরোপুরি উগরে দিয়েছে চাকরিহারারা। এই সভা মঞ্চ থেকেই তাঁরা ঘোষণা করেছেন ‘সুপ্রীম কোর্টের রায় অমানবিক এবং তাঁরা এই আইন মানছেন না।’ তাঁরা রাজ্য সরকারকে চাপে  রেখে সতর্ক করে  বলেছেন,”এখনই ব্যবস্থা নিন।” এর আগে তাঁরা নানারকম হুমকির আশ্রয় নিয়েছিলেন। চাকরিহারারা বলেছিলেন, ‘কাউকে ভোট করতে দেওয়া হবে না।’ বিরোধী দলগুলির উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, “আমাদের বর্তমান মানসিক পরিস্থিতিকে নিয়ে মার্কেটিং করার চেষ্টা করবেন না।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার বৃহত্তর চক্রান্ত চলছে। উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার আগে ক্লাস ৯, ১০, ১১, ও ১২এর সময় এই শিক্ষকরাই গেটওয়ে হয়ে  ওঠেন। এই শিক্ষকদের মধ্যে অনেকে আছেন যাঁরা গোল্ড মেডেলিস্ট, অনেকে আছেন যাঁরা নিজেদের  ছাত্র জীবনে দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছেন। তাঁদেরকে তোমরা চোর বলছো ? তাঁদের বলছো অনির্ভরযোগ্য ? কে তোমরা ? কে তোমাদের এই অধিকার দিয়েছে ? কে এই খেলা খেলছে ?  এঁদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। আমি চাই অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, কল্যাণ ব্যানার্জি,  প্রশান্ত ভূষণ, রাকেশ দ্বিবেদীরা গোটা  বিষয়টা দেখুন এবং এঁদের পাশে থাকুন। “

মমতা আরও বলেন, “এঁদের পাশে থাকব। যতদিন না এঁরা সুবিচার পান। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, এঁদের পাশে থাকব।  আমি জানি আমার বক্তব্যের কারণে আমাকে হয়ত জেলেও পাঠানো হতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি এই চাকরিহারা শিক্ষকদের পাশে থাকবো।”

এদিকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের ভিতরে সবাই না ঢুকতে পেরে বিহু চাকরিহারা শিক্ষকরা জোর করে ভিতরে ঢুকতে গেলে পুলিশ আটকে। সেই সময় অশান্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের বাইরে। চাকরিহারা শিক্ষকদের সাথে পুলিশের ধ্বস্তাধস্তিও হয় ।


Loading

Leave a Comment