সামনেই ২১শে জুলাই, সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক নিয়ে তৃণমূলের আন্ডারে ক্ষোভ জন্মেছে, চিন্তায় তৃণমূল নেতৃত্ব

আজ খবর (বাংলা), [রাজনীতি] জলপাইগুড়ি,পশ্চিমবঙ্গ, ০৩/০৭/২০২৫ : সংখ্যালঘুদের শুধুমাত্র ভোট ব্যাংক হিসেবেই ব্যবহার করে তৃণমুল , গোপন বৈঠক থেকে বিদ্রোহের আওয়াজ।
২১ জুলাইয়ের আগে জলপাইগুড়ি তৃণমূলে অন্দরের বিদ্রোহ।
২১ জুলাই শহিদ দিবসের আগে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দলের সংখ্যালঘু সেলের নেতাদের অভিযোগ, দলীয় কাঠামোয় তাদের প্রান্তিক করে রাখা হচ্ছে, উন্নয়নের নামে চলছে পক্ষপাত এবং সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংখ্যালঘু নেতৃত্বকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বানারহাট ব্লকের তেলিপাড়ায় সংখ্যালঘু সেলের জেলা কার্যালয়ে একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হন জেলার বিভিন্ন ব্লকের সংখ্যালঘু নেতারা। বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মিজানুর রহমান। বৈঠকে সরাসরি মাদার তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দল কেবলমাত্র ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করছে, কিন্তু সংগঠনের মূলস্রোতে তাদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে না।
বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে ২৮শে জুনের একটি ঘটনা। সেদিন শহরের আর্ট গ্যালারিতে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভা শেষে দুই সংখ্যালঘু তৃণমূল কর্মীকে আটক করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। উপস্থিত ছিলেন সংখ্যালঘু জেলা সভাপতি মিজানুর রহমান ও সদর সভাপতি আব্দুল বারি। তাঁরা পুলিশকে বাধা দিলেও কোনও কর্ণপাত হয়নি। পরে জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ ও অন্যান্য নেতৃত্বের দ্বারস্থ হলেও মেলেনি প্রতিকার।
এই ঘটনার পর থেকেই জেলার সংখ্যালঘু সেলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা সভাপতি বৈঠক ডাকেন, কিন্তু সেখানে আরও বিস্ফোরক হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। জেলা সভাপতির সামনেই ক্ষোভ উগরে দেন ব্লক নেতৃত্ব।
জেলা সংখ্যালঘু সভাপতি মিজানুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
“নেতৃত্বের ক্ষোভ যথার্থ। বহু তৃণমূল নেতা সংখ্যালঘু নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিতে চান না। উন্নয়নের নামে অর্থ এলেও সংখ্যালঘুরা প্রকৃত উপকার পাচ্ছেন না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ডোমা-মাইনরিটি ডিপার্টমেন্টের অর্থে ধূপগুড়িতে দোকানঘর নির্মাণ হলেও সেখানে সংখ্যালঘুদের জায়গা দেওয়া হয়নি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ঘটনা ২১ জুলাইয়ের মতো বড় কর্মসূচিকে সামনে রেখে দলের ভাবমূর্তিতে বড় ধাক্কা দিতে পারে। বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ‘ভোটব্যাঙ্ক’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করে এসেছে। এবার সেই অভিযোগ যেন ঘর থেকেই উঠতে শুরু করেছে।
এখন দেখার, মাদার তৃণমূল নেতৃত্ব এই বিক্ষোভ সামাল দিতে কী পদক্ষেপ নেয়।