
আজ খবর (বাংলা) [রাজনীতি] কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ০৯/০৪/২০২৫ : ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে গতকাল মুর্শিদাবাদে যে তাণ্ডব করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গোটা ঘটনার জন্যে রাজ্য সরকারের মনোভাবকেই দায়ী করেছেন তিনি। তার সাথে সাথে তৃণমূলের ভোট ব্যাংক রক্ষার কোথাও তুলে ধরেছেন।
গতকাল মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে ব্যাপক অশান্তি ছড়িয়েছিল। একদল মানুষ জাতীয় সড়কের ওপর গাড়িগুলিতে ভাংচুর চালাচ্ছিল। পুলিশ আটকাতে গেলে পুলিশকেই আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল। পুলিশের দিকে পাথর বৃষ্টি করা হয়েছিল। পুলিশের দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তরদিনাজপুরের রঘুনাথগঞ্জ এবং নদীয়া জেলার কিছু জায়গাতেও। শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা যাওয়ার জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। গতকাল পুলিশকে রক্তাক্ত হতেও দেখা গিয়েছিল ।
গতকালের এই ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল, প্রচুর কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছিল। RAF নামানো হয়েছিল, এরপরেই তাণ্ডবের মাত্রা কিছুটা কমেছিল। এই অঞ্চলে উত্তেজনা রয়েছে আজও। এলাকায় পুলিশ পিকেটিং করা হয়েছে। এলাকায় ১৬৩ ধারা হয়েছে। একসাথে পাঁচ জনের বেশি কেউ থাকতে পারবে না, গোটা এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। গোটা এলাকার ওপর কড়া নজরদারি রেখেছে পুলিশে বিশাল বাহিনী। রঘুনাথগঞ্জ ও সুতিতে আগামী তিন দিনের জন্যে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধই থাকছে। এই জায়গাগুলিতে নতুন করে আর অশান্তি না ছড়ালেও দোকানপাট বাজার সবই ছিল বন্ধ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল থেকেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল আইন হিসেবে বলবৎ করা হয়েছে। তার প্রতিবাদেই গতকাল মুর্শিদাবাদের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু এই কি প্রতিবাদের ভাষা ? সাধারণ মানুষের দেওয়া করের টাকায় কেনা সরকারি সম্পত্তি পুড়িয়ে প্রতিবাদ দেখানো হবে ? গতকাল রাজ্য সরকারেরই এক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী প্রতিবাদের নাম বলেছিলেন এই আইন তিনি মানেন না। মন্ত্রী হয়ে তিনি বলছেন দেশের আইন তিনি মানেন না ! গোটা বিষয়টি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বয়ান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী চিফ সেক্রেটারি ও মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছেঅনুরোধ করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অনুরোধ করে এলাকায় আধা সেনাবাহিনী নিয়োগ করার জন্যে। শুভেন্দু বলেছেন, “এই অশান্তির দায় রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে। ভোট ব্যাংকের নাম রাজ্য সরকার একটি সম্প্রদায়কে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ সুবিধা দিয়ে এসেছেন। আজ তার পরিণামেই এই ঘটনাগুলি ঘটছে।”
গতকালের ঘটনার পর তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আন্দোলনকারী জনগণের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন “এই আইনের প্রতিবাদ করুন শান্তিপূর্ণভাবে। যেমন আমি নিজে এই আইনের রিভিউ পিটিশন দায়ের করতে চলেছি সুপ্রীম কোর্টে। আপনারাও শান্তিপূর্ব আলোচনা করুন কিন্তু সরকারি বা বেসরকারি সম্পদ নষ্ট করবেন না.” জঙ্গীপুরের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করলেন তৃণমূলের আর এক বিধায়ক খলিলুর রহমান। তিনি আন্দোলনকারীদের হিংসা না ছড়ানোর আবেদন করেছেন করজোড়ে।”