নিউটন দাস ভারতীয় না বাংলাদেশী তা নিয়ে ধন্ধ  তৈরি হয়েছে 

আজ খবর (বাংলা), [রাজ্য], কাকদ্বীপ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ০৮/০৬/২০২৫ : এপার বাংলার ভোটার ওপার বাংলার গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের অন্যতম মুখ,  ছবি প্রকাশ হতেই শোরগোল এলাকায়। 

সম্প্রতি কাকদ্বীপে একের পর এক বাংলাদেশী ভুয়ো ভোটারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল। সেই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কাকদ্বীপ বিধানসভার বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা তিনি দাবি করেন টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা, ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম তুলেছে এবং এ রাজ্যে বসবাস করছে। এই ঘটনার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল গোটা এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল কাকদ্বীপ বিধানসভা জুড়ে। 

আবারও  খবরের  শিরোনামে কাকদ্বীপ বিধানসভা। কাকদ্বীপের ভোটার কিন্তু বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের সামিল এবং উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ছবি ভাইরাল হতেই সেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিকে হাতিয়ার করে শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে পদ্ম শিবির।  নিউটন দাস নামে ওই বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে তৃণমূলের এক ছাত্রনেতার ছবিও সামনে এনেছে বিজেপি। দাবি করা হচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে ওই বাংলাদেশি যুবকের। 

ভুয়ো ভোটার ইস্যুতে যখন রাজ্যে রাজনৈতিক ডামাডোল চরমে, ঠিক সেই সময়ে এই অভিযোগে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়েছে।গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নাকি যোগ দিয়েছিল নিউটন দাস। সম্প্রতি নিউটনের সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিজেপির দাবি, কাকদ্বীপের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে সেই নিউটনেরই। নিউটন একটা সময়ে কাকদ্বীপের স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের দাসপাড়ার থাকত বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও নিউটনের পুরো পরিবার বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে।এপার বাংলায় সর্বপ্রথম পা দিয়েছিলেন নিউটনের দাদা তপন দাস। ২০১১ সালে বাংলায় এসে পরবর্তী ভোটার তালিকায় নিজের নাম তোলে সে।

পরবর্তীকালে দাদার পিছু পিছু বাংলায় ঢুকে পড়েন নিউটন, এমনটাই অভিযোগ। কাকদ্বীপেরই নামখানা এলাকার একটি স্কুলে পড়াশোনা করেছে সে। সম্প্রতি সেই নিউটনের ছবি আবার ভাইরাল হল সমাজমাধ্যমে। সেই ছবিতে দেখা গেল, বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনে সামিল হয়েছিল নিউটন। তবে কি পড়াশোনা শেষ করেই আবার নিজ দেশে চলে গিয়েছে সে?  সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি দেবাশিস দাস বলেন, “নামখানার দেবনগর এলাকার একটি স্কুলে হস্টেলে থেকে পড়ত নিউটন। স্কুলে আমার সঙ্গেই পড়ত। সেই সূত্রেই বন্ধুত্ব ছিল। আমরা সকল বন্ধুদের জন্মদিনে যেভাবে কেক কাটি, কয়েক বছর আগে ওর জন্মদিনেও কেক কেটেছি। এর বেশি কিছু নয়। এখানে কীভাবে ভোটার কার্ড হয়েছে বলতে পারব না। কারণ যতদূর জানি, যখন ওর ভোটার লিস্টে নাম উঠেছে তখন আমি রাজনীতির কোনও পদেই ছিলাম না। বিজেপি যদি আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে তাহলে প্রমাণ-সহ এফআইআর করতে বলুন। চ্যালেঞ্জ করছি, কিছুই করতে পারবে না। আমি ওইসব অভিযোগে ভয় পাই না।”  

এ বিষয়ে কাকদ্বীপ  পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য প্রদীপ কুমার প্রামানিক বলেন, “যদি দুটো দেশের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাহলে এটা বেআইনি। কিন্তু যে ছবিগুলো ভাইরাল করা হয়েছে, সেই ছবিগুলোকে আগে থেকে তুলে রাখা হয়েছিল এবং ভাইরাল করার জন্যই সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। সাধারণ মানুষ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের কোন মানুষ কোথাকারের সেটা জানা সম্ভব হয় না।”   

বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক সঞ্জয় দাস জানান, “এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের টাকার বিনিময়ে এ রাজ্যে যারা ভোটার লিস্টে নাম নথিভুক্ত করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। এ সকল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা, এই এলাকায় এসে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্ব পাতায় এবং তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে ভোটার কার্ড এবং রেশন কার্ড তৈরি করে এ রাজ্যে থেকে যায় অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনকে আরো কঠোর হতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনের উচিত যে সকল শাসক দলের নেতারা টাকার বিনিময় এইরকম বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার কার্ড তৈরি করে ওদের মদত দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ প্রশাসন।”  সব মিলিয়ে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কাকদ্বীপ এলাকায়।


Loading

Leave a Comment