ছিঃ

আজ খবর (বাংলা), [রাজ্য], গয়েশপুর, নদীয়া, ০৯/০৭/২০২৫ : আজ সকালটা ছিল একটু অস্বাভাবিক। পাড়ার পরিচিত পথকুকুর ‘কালু’র আজ শেষ দিন। সাধারণত শান্ত স্বভাবের প্রাণীটি।
হঠাৎ আজ যা ঘটলো সভ্য সমাজে মানা যায় না। আচমকা কালু ঢুকে পড়ে আমাদের পাড়ার পাশের স্কুলে। তখন চলছে ক্লাস, শিক্ষকরা আশেপাশেই। কালুকে দেখে আতঙ্ক ছড়ায়, কিন্তু ওকে ধরা বা রক্ষা করার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বরং সিদ্ধান্ত হয়, ‘ওকে মেরে ফেলতে হবে’। আর সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে স্কুলের ছাত্ররাই—শিক্ষকদের উপস্থিতিতে, বলা যায় শিক্ষকদের সাপোর্টেই এটা করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে গয়েশপুর নেতাজি বিদ্যামন্দিরের, স্কুল ইউনিফর্ম পরা ছাত্ররা ঘিরে ধরে কালুকে এবং বারবার আঘাত করে মাথায়, শরীরে। শিক্ষকদের ব্যবহার দেখে আজ সত্যি বলতে লজ্জা করছে যে এই এলাকার বহু প্রতিষ্ঠিত মানুষ একসময় এই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন।
এই ঘটনা শুধুই একটি কুকুর হত্যার নয়। এটি সেই ভয়ঙ্কর শিক্ষা ব্যবস্থার নগ্ন প্রকাশ, যেখানে সহানুভূতির পরিবর্তে শিখানো হচ্ছে হিংসা। যেখানে শিক্ষক আর আদর্শ নন, বরং নীরব দর্শক। যেখানে ছাত্রদের খুন করানো শেখানো হচ্ছে। আজ কুকুর মারছে কাল তো মানুষ খুন করবে!
আজ কালু মরে গেছে। কাল হয়তো আরেকটা কালু মরবে, অন্য কোথাও, অন্য কোনও ‘শিক্ষিত’ হাতে। প্রশ্ন একটাই—এই যে স্কুল প্রাঙ্গণেই সহিংসতার চর্চা চলছে, তার ভবিষ্যৎ কী?
আমরা কি বাঁচতে চাই এক এমন সমাজে, যেখানে শিক্ষা নয়, মৃত্যুই সহজ সমাধান?
একটু থামুন। ভাবুন।
পথের প্রাণীরাও আমাদের পৃথিবীর বাসিন্দা। সহানুভূতি হারালে মানুষও একদিন ‘পশু’র চেয়েও হিংস্র হয়ে উঠবে। যেটা স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ হয়ে উঠেছে।
![]()