রোহিঙ্গা বাংলাদেশী বলে কার্গিল যুদ্ধের প্রবীণ সেনার পরিবারকে হেনস্থা 

কার্গিল যুদ্ধের প্রবীণ সেনা পরিবারকে রোহিঙ্গা বলে হেনস্থা 

হাকিমুদ্দিন শেখ

আজ খবর (বাংলা) [দেশ], পুনে, মহারাষ্ট্র, ৩১/০৭/২০২৫ :  মহারাষ্ট্রের পুনেতে সেই পরিবারকেই এবার বাংলাদেশী রোহিঙ্গা বলে দাগিয়ে দেওয়া হল যে পরিবার কার্গিল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।  তৃণমূল নেত্রী বার বার অভিযোগ করেছেন দেশের বেশ কিছু প্রান্তে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সন্দেহ করে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।  পুনের ঘটনা যেন তারই জ্বলন্ত নিদর্শন।

পুনের চন্দননগর এলাকার বাসিন্দা ওই পরিবার অভিযোগ করেছে যে “তাদের বাড়িতে গতকাল রাত্রি 11:30 নাগাদ একদল মানুষ জোর করে বাড়িতে ঢুকে নো নোংড়া ভাষায় অভিযোগ করে যে তারা বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী এবং রোহিঙ্গা। বাড়িতে ঢুকে হুজ্জুতি করতে থাকা লোকগুলি বজরং দলের হয়ে স্লোগান দিচ্ছিল। তাদের সাথে সাদা পোশাকে পুলিশও  থাকতে পারে বলে মনে হয়েছে।” 

প্রবীণ সেনা হাকিমুদ্দিন শেখের ভাই ইরশাদ শেখ বলেন, “আমরা গর্বিত ভারতীয়, গত ১৩০ বছর ধরে আমাদের পরিবার বিভিন্ন পদে জাতির সেবা করে চলেছি। তবুও আমাদের সাথে এমন ব্যবহার করা হচ্ছিল যেন আমরা অপরাধী। ১৯৯৯ সালে আমাদের পরিবারের হাকিমুদ্দিন শেখ কার্গিল যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এদিন রাত্রি সাড়ে এগারোটা নাগাদ প্রায় ৭০-৮০ জন আমাদের বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে বলে আধার কার্ড দেখাও, নাহলে তোমাদের মেরে ফেলব। আমরা ঐ  পরিস্থিতিতে কাগজপত্র দেখানোর চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু তারা বাড়ির মধ্যে ঢুকে রীতিমত তাণ্ডব চালাতে শুরু করে দেয়। তারা জানায় তারা বজরং  দলের সদস্য।”

প্রবীণ সেনা হাকিমুদ্দিন বলেন, “আমার পরিবারের শেখ নাযিমুদ্দিন ও শেখ মহম্মদ সালিম  ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমি ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। আমাদের পরিবার চিরকাল দেশের সেবা করে এসেছে। সেই আমাদেরকেই প্রমান দিতে হবে যে আমরা এই দেশের নাগরিক ?  শুধুমাত্র একটা কার্ড দেখলেই প্রমান হয়ে যাবে যে আমরা এই দেশের নাগরিক ? আর সেটাও দেখতে হবে বজরং দলকে ?” এই ঘটনায় গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে শেখ পরিবারের বুকে।  

গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ঘটনায় পুলিশের যুক্ত থাকার বিষয়টা অস্বীকার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে “যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আক্রান্তদের আশ্বস্ত করেছি।”

এই খবরটি শেয়ার করুন এবং নিজস্ব মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।


Loading

Leave a Comment