আরও একজনের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চলছে। মহাদেব পর্বতের নিচে এখনও চলছে অপরেশন মহাদেব।

আজ খবর (বাংলা) [দেশ] নতুন দিল্লি, ভারত, ২৯/০৭/২০২৫ : জম্মু ও কাশ্মীরের লিদওয়াস অঞ্চলে যে তিন জঙ্গিকে ভারতীয় সেনা খতম করে দিয়েছে, তারাই পোহেলগাঁও এর বৈশরণ উপত্যকায় ২৬ জন পর্যটকদের ধর্ম যাচাই করে নির্বিচারে হত্যা করেছিল, বলে সংসদে দাঁড়িয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানালেন, “এরাই সেই সন্ত্রাসবাদী, যারা গত ২২ শে এপ্রিল হত্যাকাণ্ড চালিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল। তার সমস্ত প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। এরা এই জঘন্য কাজ করেছিল ২২শে এপ্রিল আর ওদের খতম করা হলো ২২ শে জুলাই।”
অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের দিন অর্থাৎ ২২ তারিখ গোয়েন্দাদের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর ২৩ তারিখ ভোরবেলায় আমি পৌঁছে যাই কাশ্মীরে। এই জঙ্গীরা যাতে সীমান্ত পরকরে পালাতে না পারে, তার জন্যে সব রকম ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিই। এরপর এন আই এ তদন্তে নামে। এই নরাধম জঙ্গীদেরকে কে বা কারা আশ্রয় দিয়েছিল, খবর দিয়েছিল বা অন্যান্য কিচ্ছু দিয়ে সাহায্য করেছিল, তাদেরকে খুঁজে বের করা হয়, তাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানাগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই জঙ্গীদের সাহায্যকারী দোকানদার, ফটোগ্রাফার, ঘোড়াওয়ালা, কর্মী, গাইড এরকম প্রায় ১০৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, এরপর। জঙ্গীদের স্কেচ আঁকানো হয়।”
অমিত শাহ বলেন, “এর মধ্যেই আমাদের কাছে ইনপুট আসে যে কয়েকজন জঙ্গী কাশ্মীরের লিদওয়াস অঞ্চলের ভয়ঙ্কর বন্ধুর ও অরন্য সঙ্কুল জায়গায় গুহার মধ্যে লুকিয়ে আছে। আমরা কোনো তাড়াহুড়ো করি নি। জায়গাটিকে ঘিরে নিয়েছিল সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং কাশ্মীর পুলিশের জওয়ানরা। ২৪ ঘন্টাফতাদের ওপর নজরদারি চালানো হয়েছে। যারা জঙ্গীদের সাহায্য করেছিল বৈশরণ উপত্যকায়, তাদেরকে দিয়ে চিহ্নিত এবং নিশ্চিত করে পরেই খতম করা হয়েছে ওই জাঙ্গীদেরকে। বৈশরন ভ্যালিতে যে গুলির খোল আমরা পেয়েছিলাম সেই গুলির খোলই ওই জঙ্গীদের থেকে পাওয়া গিয়েছে। ওদের থেকে একটি এম নাইন ইনসাস রাইফেল ও দুটি এ কে ৪৭ রাইফেল পাওয়া গিয়েছে। ঐ বন্দুকগুলো দিয়েই সেদিন ওরা বৈশরণ ভ্যালিতে ২৬ জনকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। ওদের থেকে পাওয়া কার্তুজ ফায়ার করে খোল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে বাইশরণ ভ্যালী থেকে সেদিন পাওয়া গুলির খোল একই। ঐ পরীক্ষার ব্যালিস্তিক রিপোর্ট আমার কাছে আছে। এছাড়া জঙ্গীদের পকেট থেকে যে চাকলেটগুলি পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলি পাকিস্তানের। এত কিছু প্রমাণ করে ওরা পাকিস্তানি।”
অমিত শাহ আরও বলেন, “অপরেশন মহাদেব এখনও চলছে। আমাদের কাছে খবর আছে, আরও একজন জঙ্গী আছে, যে সেদিন বৈষরণ ভ্যালিতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল। তাকে এখনও খতম করা হয় নি। তার খোঁজেই মহাদেব পর্বতের বিভিন্ন জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এর আগে অপরেশন সিঁদুর চালিয়ে এই জঙ্গীদের মালিকদের ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। এবার অপরেশন মহাদেব চালিয়ে এমন বার্তা তিনি দিচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে ভারতেসন্ত্রাস চালানোর আগে পাকিস্তান যেন অন্তত দুইবার ভাবে।”
![]()